খুলনা জেলা
, সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার । বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত খুলনা বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম জেলা। শিল্প বাণিজ্য, প্রকৃতি ও লোকজ সংস্কৃতির এই অভূতপূর্ব মিলন ঘটেছে এই জেলায়।
খুলনা জেলার নামকরণের ইতিহাস
এই জেলার নামকরণের উৎপত্তি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত মতগুলো হচ্ছে-
ক) ধনপতি সওদাগরের দ্বিতীয় স্ত্রী খুলনার নামে নির্মিত ‘খুলনেশ্বরী মন্দির’ থেকে খুলনা নামের উৎপত্তি।
খ) ১৭৬৬ সালে ‘ফলমাউথ’ জাহাজের নাবিকদের উদ্ধারকৃত রেকর্ডে লিখিত Culnea শব্দ থেকে খুলনা।
গ) অনেক বিজ্ঞজনের মতে ‘কিসমত খুলনা’ মৌজা থেকে খুলনা নামের উৎপত্তি হয়েছে।
ঘ) বৃটিশ আমলের মানচিত্রে লিখিত Jessore-Culna শব্দ থেকে খুলনা এসেছে বলেও অনেকের ধারণা। তবে কোনটি সত্য তা এখনও গবেষণার বিষয়।
খুলনা জেলার ইতিহাস
খুলনা পৌরসভার জন্ম বৃত্তান্তে আসতে গেলে দেখা যায় যে, পৌর এলাকা অতীতে জসর (যশোর) জেলার মুরলী থানার অন্তর্গত ছিল। পরে রূপসা নদীর পূর্ব পাড়ে তালিমপুর, শ্রীরামপুর (রহিমনগর) এর কাছে সুন্দরবনের জঙ্গল কেটে নতুন থানা স্থাপন করা হয় এবং এর নাম দেয়া হয় নওবাদ (নয়াবাদ)। কারো মতে এ নতুন থানা ১৭৮১ খ্রিঃ আবার কারো মতে ১৮৩৬ খ্রিঃ সৃষ্টি হয়। ১৮৪২ সালে খুলনা মহকুমার জন্ম হয়। অবিভক্ত বাংলার প্রথম মহকুমা খুলনা।
পরে তার পরিধি সম্প্রসারিত হয়ে বর্তমানের খুলনা ও বাগেরহাট জেলা দু’টি নিয়ে ছিল খুলনা মহকুমা। ১৮৬৩ সালে বাগেরহাটে স্বতন্ত্র মহকুমার কার্যালয় স্থানান্তরিত হয়। ১৮৪৫ সালে সেখানে প্রথম দালান কোঠা ওঠে যা আজকে জেলা প্রশাসকের বাসভবন। খুলনার প্রথম প্রশাসক ছিলেন ডেপুটি মিঃ শোর এবং দ্বিতীয় মহকুমা হাকিম ছিলেন সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি এই বাসভবনে বসে তার উপন্যাস ‘দুর্গেশ নন্দিনী’ রচনা করেছিলেন। পরে ১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিলের সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী খুলনা জেলার জন্ম হয় এবং তৎকালীন যশোর জেলার খুলনা ও বাগেরহাট মহকুমা দুটি এবং ২৪ পরগনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমা নিয়ে ঐ সালের ১ জুন থেকে এ নতুন জেলার কাজ শুরু হয়। প্রথম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন মিঃ ডব্লুউ এন ক্লে তার নামানুসারে শহরের ক্লে রোড হয়েছে।
খুলনা জেলা শহর হলেও এখানে বেশীদিন আগে জনবসতি গড়ে ওঠেনি। মুলতঃ সুন্দরবনের জঙ্গল কেটে রূপসা ও ভৈরব নদীর পাড়ে জনবসতি গড়ে ওঠে। মূল শহর থেকে কিছুটা দূরে ভৈরব নদীর অপর পাড়ে সেনহাটিতে খুলনার প্রথম জনবসতি গড়ে ওঠে বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। ১৮৬৯ সালের ১ এপ্রিল খুলনার প্রথম মিউনিসিপ্যালিটি স্থাপন করা হয় সাতক্ষীরাতে। দ্বিতীয় মিউনিসিপ্যালিটি গঠিত হয় ১৮৭৬ সালে বর্তমান সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটায়। তবে ১৯৫৫ সালে সেটি বাতিল হয়ে ইউনিয়ন বোর্ডে পরিণত হয়। জেলার তৃতীয় মিউনিসিপ্যালিটি গঠিত হয় ১৮৮৪ সালে খুলনা শহরে।
এর দুই বছর পর ১৮৮৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর মিউনিসিপ্যালিটির দ্বিতীয় সভায় ভাইস চেয়ারম্যান বাবু কৈলাশচন্দ্র কাঞ্জিলালের বাড়ি সত্যচরণ হাউসে সাময়িক ব্যবস্থা হিসাবে মিউনিসিপ্যালিটির অফিস স্থাপন করা হয়। এখান থেকেই মূলত পরিচালিত হতো শহরের প্রশাসনিক কর্মকান্ড। আজ আর সে ভবনের অস্তিত্ব না থাকলেও অনেকের মতে ভবনটি বর্তমান পৌর ভবনের সন্নিকটে ছিল।
খুলনা মিউনিসিপ্যালিটির জন্ম বৃত্তান্ত খুঁজতে গিয়ে একশ’ বছর আগের একটি গেজেট থেকে জানা যায়, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে বাংলার লেফটেন্যান্ট-গভর্নর ১৮৭৬ সালের একযাক্ট, ৫(বিসি) এর ৮নং ধারা মতে ১৮৮৪ সালের ১ জুলাই থেকে কয়লাঘাট ও হিলাতলা (হেলাতলা)সহ খুলনা, বানিয়াখামার, টুটপাড়া, গোবরচাকাসহ শিখপাড়া (শেখপাড়া), নুরনাগুর (নুরনগর), চারাবাটিসহ শিববাটি, বারিয়াপাড়াসহ ছোট বয়রা গ্রামসমূহ নিয়ে খুলনাকে ২য় শ্রেণীর মিউনিসিপ্যালিটি করার জন্য ১৮৮৪ সালের ১৮ মে এক বিজ্ঞপ্তি জারী করেন। ঐ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের এক মাসের মধ্যে গ্রহণযোগ্য আপত্তি উত্থাপিত না হলে, প্রস্তাব কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়।
‘দি ক্যালকাটা গেজেটে’ ১৮৮৪ সালের ২৮ মে সংখ্যার ৬৩৮ পাতার মুদ্রিত মিউনিসিপ্যালিটির প্রস্তাবিত চৌহদ্দী ছিল উত্তরে ভৈরন নদী, পূর্বে ভৈরব ও রূপসা নদীসমূহ, দক্ষিণে- মতিয়াখালী খাল এবং লবণচরা খাল এবং মইয়া নদীর উত্তরাংশ এবং পশ্চিমে- বড় বয়রার দক্ষিণ পূর্ব অংশ, গোয়ালপাড়া এবং মুফগুন্নি (মুজগুন্নি)। পরবর্তীতে ১৮৮৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বরের বিজ্ঞপ্তি দ্বারা বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর খুলনাকে মিউনিসিপ্যালিটি ঘোষণা করেন। এ বিজ্ঞপ্তিটি দি ক্যালকাটা গেজেটে ১৮৮৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৫৩ পাতায় মুদ্রিত হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী কারণসম্মত আপত্তি পড়ায় শেখপাড়াসহ গোবরচাকা এবং নুরনগর বাদ দিয়ে কয়লাঘাটাসহ খুলনা, হেলাতলা, বানিয়াখামার, টুটপাড়া, চারাবাচিসহ শিববাঠী এবং বারিয়াপাড়াসহ ছোট বয়রা নিয়ে মিউনিসিপ্যালিটি ১৮৮৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর করা হয়। এ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ১৮৮৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে খুলনা মিউনিসিপ্যালিটির প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে রেভারেন্ড গগণচন্দ্র দত্ত কার্যভার গ্রহণ করেন। একশ’ ৫৬ বছর আগে ১৮৫৬ সালে কালেক্টর ভবনের পাশে খুলনার প্রথম মসজিদ স্থাপিত হয়। এই মসজিদটি নগরীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ঈদগাহ জামাত স্থল।
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম স্থান খুলনা। নদী বন্দর, উন্নত সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং সমতল ভুমির কারণে এ শহরটি প্রসারিত হচ্ছে দ্রুতগতিতে। জনবসতি বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই জেলার ভূমিকা অগ্রগামী।
খুলনা জেলার উপজেলাগুলি হল –
• কয়রা
• ডুমুরিয়া
• তেরখাদা
• দাকোপ
• দিঘলিয়া
• পাইকগাছা
• ফুলতলা
• বটিয়াঘাটা
• রূপসা
ভোগোলিক পরিচিতি
খুলনা জেলার অবস্থান: ২১ ডিগ্রী ৪১ মিনিট থেকে ২৩ ডিগ্রী ০০ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯ ডিগ্রী ১৪ মিনিট থেকে ৮৯ ডিগ্রী ৪৫ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে যশোর ও নড়াইল জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বাগেরহাট জেলা, পশ্চিমে সাতক্ষীরা জেলা।
খুলনা জেলার নদ-নদী:
খুলনা জেলায় রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নদী। এখানকার নদীগুলো হচ্ছে রূপসা নদী, ভৈরব নদ, শিবসা নদী, পশুর নদী, কপোতাক্ষ নদ, নবগঙ্গা নদী, চিত্রা নদী, পশুর নদী, আঠারোবাঁকি নদী, ভদ্রা নদী, বুড়িভদ্রা নদী, শৈলমারী নদী, কাজিবাছা নদী, ডাকাতিয়া নদী, শাকবাড়িয়া নদী, কাঁকরী নদী, ঝপঝপিয়া নদী, তেলিগঙ্গা-ঘেংরাইল নদী, অর্পণগাছিয়া নদী, কুঙ্গা নদী, মারজাত নদী, মানকি নদী, বল নদী, নলুয়া নদী, ঘনরাজ নদী।
খুলনা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
পৃথিবীর বৃহত্তম উপকূলীয় বনভূমি সুন্দরবন, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা
• খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর, খুলনা
• বনবিলাস চিড়িয়াখানা, খুলনা
• রূপসা নদী
• বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি, দক্ষিণ ডিহি, ফুলতলা, খুলনা
• আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় এর জন্ম স্থান, পাইকগাছা থানা, খুলনা
• রূপসা সেতু, খুলনা
• ধর্ম সভা আর্য মন্দির
• শহীদ হাদিস পার্ক ভাষাস্মৃতি শহীদ মিনার
• গল্লামারি বধ্যভূমি শহীদস্মৃতি সৌধ
• জাতিসংঘ শিশুপার্ক, শান্তিধাম মোড়, খুলনা
• ধামালিয়া জমিদার বাড়ি
খুলনা জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
• খান জাহান আলী (১৩৬৯ – ২৫ অক্টোবর ১৪৫৯) – ইসলাম ধর্ম প্রচারক ও বাগেরহাটের স্থানীয় শাসক;
• কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার (১৮৩৪ – ১৯০৭) – স্বনামধন্য কবি;
• মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩)-সনামধন্য কবি ও নাট্যকার;
• আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (২ আগস্ট ১৮৬১ – ১৬ জুন ১৯৪৪) – প্রখ্যাত বাঙালি রসায়নবিদ, বিজ্ঞানশিক্ষক, দার্শনিক, কবি;
• মৃণালিনী দেবী (মার্চ ১৮৭৪ – ২৩ নভেম্বর ১৯০২) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহধর্মিনী;
• রসিকলাল দাস (১৮৯৯ – ৩ আগস্ট ১৯৬৭) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী;
• অতুল সেন (মৃত্যুঃ ৫ আগস্ট ১৯৩২) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী;
• অনুজাচরণ সেন (জুন ১৯০৫ – ২৫ আগস্ট ১৯৩০) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী;
• বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায় (এপ্রিল ১৯১০ – ১১ এপ্রিল ১৯৭১) – জমিদারতন্ত্র বিরোধী কৃষক আন্দোলনের ঐতিহাসিক নেতা ও সাম্যবাদী রাজনীতিবিদ;
• শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (১১ জুলাই, ১৮৯৭ – ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮২) শ্রমিক নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামী
• শেখ রাজ্জাক আলী (২৮ আগস্ট ১৯২৮ – ৭ জুন ২০১৫) – খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ ও্ জাতীয় সংসদের সাবেক স্পীকার;
• আবেদ খান (জন্মঃ ১৬ এপ্রিল ১৯৪৫) – সাংবাদিক ও কলাম-লেখক;
• মো.রফিকুল ইসলাম (রিপন) (জন্ম : ২০ মার্চ, ১৯৭২) সম্পাদক / মহাসচিব – পার্লামেন্ট ওয়াচ
• ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী (১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৭ – ৬ মার্চ ২০১৮) – প্রখ্যাত ভাস্কর;
• তানভীর মোকাম্মেল (১৯৫৫) – চলচ্চিত্র পরিচালক;
• ওমর সানী (৬ মে ১৯৬৯) – চলচ্চিত্র অভিনেতা;
• মৌসুমী (১১ নভেম্বর ১৯৭৩) – চলচ্চিত্র অভিনেত্রী;
• শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ (১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ – ২৯ অক্টোবর ২০১৩) – বাংলাদেশী ক্রিকেটার;
• আব্দুর রাজ্জাক (১৫ জুন ১৯৮২) – বাংলাদেশী ক্রিকেটার;
• এনামুল হক (১৬ ডিসেম্বর ১৯৯২) – বাংলাদেশী ক্রিকেটার, উইকেট-রক্ষক এবং ডানহাতি ব্যাটসম্যান;
• মানজারুল ইসলাম রানা (৪ মে ১৯৮৪ – ১৬ মার্চ ২০০৭) – বাংলাদেশী ক্রিকেটার;
• মেহেদী হাসান (২৫ অক্টোবর ১৯৯৭, খুলনা) – বাংলাদেশী ক্রিকেটার, ডান-হাতি অফ ব্রেক এবং ব্যাটসম্যান
• সালমা খাতুন (১ অক্টোবর ১৯৯০) – বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার;
• রুমানা আহমেদ (২৯ মে ১৯৯১) – বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার;
• আয়শা রহমান (১৪ জানুয়ারি ১৯৮৪) – বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার;
• জাহানারা আলম (১ এপ্রিল ১৯৯৩) – বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার;
• শুকতারা রহমান (২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪) – বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার।
• এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা- খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ ও সাবেক হুইপ
• নারায়ণ চন্দ্র চন্দ – মন্ত্রী , মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়
• ড. মশিউর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা।
আরও পড়তে পারেন চট্টগ্রাম জেলার পরিচিতি ও ইতিহাস
তথ্যসূত্র: জাতীর তথ্যবাতায়ন, উইকিপিডিয়া, ব্লগ